সফল হতে চাইলে শিখতে হবে অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট

সফল হতে চাইলে শিখতে হবে অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট

সাফল্য অর্জনের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট একটি অপরিহার্য দক্ষতা। অনেকেই মনে করেন, তারা তাদের সময় সঠিকভাবে ব্যবহার করছেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, দিন শেষে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বর্তমান সময়ে অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখা জরুরি, কারণ এটি শুধু কাজের তালিকা বানানো নয়, বরং প্রোডাক্টিভিটি, ফোকাস এবং জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার একটি কৌশল।

১. অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট কী এবং কেন প্রয়োজন?

সাধারণ সময় ব্যবস্থাপনায় আমরা শুধু কাজের তালিকা তৈরি করি এবং সেগুলো ক্রমানুসারে সম্পাদন করার চেষ্টা করি। কিন্তু অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট হলো সময়, শক্তি এবং মনোযোগের অপ্টিমাইজেশন। এটি শেখার মাধ্যমে আপনি শুধু কাজ দ্রুত শেষ করবেন না, বরং সঠিক কাজগুলো সঠিক সময়ে করবেন।

এখন প্রশ্ন হলো কেন অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখবেন? প্রোডাক্টিভিটি বৃদ্ধির জন্য অর্থাৎ সময়ের সঠিক ব্যবহার করে বেশি কাজ কম সময়ে করা, স্ট্রেস কমানো বা কাজের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য, দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য সময়কে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করা, কাজ, পরিবার এবং ব্যক্তিগত সময়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখা থেকে অনেক বেনিফিট আছে টাইম ম্যানেজমেন্টের।

২. অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্টের কৌশল

ক. প্রায়োরিটাইজেশন টেকনিকঃ আইজেনহাওয়ার ম্যাট্রিক্স কাজের গুরুত্ব এবং জরুরিতার ভিত্তিতে চারটি ভাগে ভাগ করেঃ

  • জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণঃ অবিলম্বে করুন।
  • গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু জরুরি নয়ঃ পরিকল্পনা করে করুন।
  • জরুরি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়ঃ ডেলিগেট করুন বা দ্রুত শেষ করুন।
  • না জরুরি, না গুরুত্বপূর্ণঃ বাদ দিন।

এই ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করে আপনি অপ্রয়োজনীয় কাজ এড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে ফোকাস করতে পারবেন।

খ. পোমোডোরো টেকনিকঃ এই পদ্ধতিতে ২৫ মিনিট কাজ করে ৫ মিনিট ব্রেক নেওয়া হয়। প্রতি চারটি পোমোডোরো পর একটি দীর্ঘ ব্রেক (১৫-৩০ মিনিট) নিন। এটি ব্রেইনের ফোকাস এবং এনার্জি লেভেল বাড়ায়।

গ. ডিপ ওয়ার্কঃ ক্যাল নিউপোর্টের মতে, ডিপ ওয়ার্ক হলো কোনো ডিস্ট্রাকশন ছাড়াই গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করা। এটি শেখার জন্য:

  • ফোন নোটিফিকেশন বন্ধ করুন।
  • নির্দিষ্ট সময়ে ইমেইল চেক করুন।
  • একটি শান্ত জায়গায় কাজ করুন যেখানে কেউ বিরক্ত করবে না।

৩. দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট

সফল মানুষরা শুধু দিন বা সপ্তাহ নয়, মাস এবং বছর ধরে পরিকল্পনা করে। সাপ্তাহিক রিভিউ হিসেবে প্রতি সপ্তাহে আপনার অগ্রগতি চেক করুন। কোয়ার্টারলি গোল সেটিং অর্থাৎ ৩ মাস পরপর নতুন লক্ষ্য ঠিক করুন। ৫-১০ বছর পর আপনি কোথায় থাকতে চান অর্থাৎ লেগ্যাসি গোল নিয়ে ভাবুন।

অ্যাডভান্স টাইম ম্যানেজমেন্ট শেখা মানে শুধু সময় বাঁচানো নয়, বরং জীবনকে অর্থপূর্ণভাবে গঠন করা। এটি আপনার প্রোডাক্টিভিটি, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং সামগ্রিক সাফল্যকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাবে। আজই একটি প্ল্যান তৈরি করুন এবং সময়কে আপনার সবচেয়ে বড় অ্যাসেটে পরিণত করুন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ক্যারিয়ার বিষয়ক অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে ক্লিক করুন

কমেন্ট করুন