বিলেনিয়ার ইউটিউবার মিঃ বিস্ট

বিলেনিয়ার ইউটিউবার মিঃ বিস্ট

ইউটিউব জগতের নামকরা ব্যক্তিত্ব “মিঃ বিস্ট” বা জিমি ডোনাল্ডসনের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুজে পাওয়া দুষ্কর। যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনার ছোট শহর গ্রিনভিল থেকে উঠে আসা এই তরুণ ইউটিউবের অগণিত মানুষের জীবনে পরিবর্তন এনেছেন। তিনি শুধু ইউটিউবার নন বরং বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ডিজিটাল উদ্যোক্তাও।

এখন মিঃ বিস্ট বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইউটিউবারদের একজন। তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৩৩৫ মিলিয়নের বেশি। তার সাফল্য শুধু বিনোদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং তিনি নিজের দানশীল কাজ এবং মানবতার প্রতি নিবেদিত মনোভাব দিয়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন।

ইউটিউব যাত্রা

জিমি ডোনাল্ডসন ২০১২ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে ইউটিউবে তার যাত্রা শুরু করেন। প্রথম দিকে তার ভিডিওগুলিতে গেমিং এবং সাধারণ কনটেন্টের ওপর বেশি ফোকাস ছিল। তবে মিঃ বিস্টের সাফল্যের আসল যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালে, যখন তিনি “কাউন্টিং টু হান্ড্রেড থাউজেন্ড” শীর্ষক একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিওটিতে তিনি এক লাখ পর্যন্ত গণনা করে দেখান, এতে প্রায় ৪০ ঘন্টা সময় লেগেছিল। এই অদ্ভুত আইডিয়া রাতারাতি তাকে ইন্টারনেটে ভাইরাল করে তোলে।

এরপর, তিনি বিশাল বাজেটের এবং উদ্ভাবনী আইডিয়ার ভিডিও তৈরি করতে শুরু করেন। যেমন- ১ লাখ ডলার দিয়ে একটি ঘর বানানো, তার বন্ধুকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বিশাল পুরস্কার দেওয়া, বা বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেক তৈরি করা। তার ভিডিওগুলোতে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন পূরণ এবং সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টাও দেখা যায়।

জনপ্রিয়তার রহস্য

মিঃ বিস্টের সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার দর্শকদের প্রতি ভালোবাসা এবং তাদের জন্য নতুন কিছু করার ইচ্ছা। তার প্রতিটি ভিডিওতে দেখা যায় পরিশ্রম, সৃজনশীলতা, এবং বাস্তবতার ছোঁয়া। তার ভিডিওগুলোতে বড় বড় পুরস্কার দেওয়া এবং দানশীল কাজ করার মাধ্যমে তিনি শুধু বিনোদন নয়, ভালোবাসার বার্তাও পৌঁছে দেন। প্রতিটি ভিডিওতে তিনি এমন কিছু বিষয় নিয়ে আসেন, যা অন্য কেউ করার কথা ভাবতেও পারে না। তিনি তার দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং তাদের চাহিদা বুঝে কনটেন্ট তৈরি করেন।

ব্যাবসায়ী মিঃ বিস্ট

মিঃ বিস্ট কেবল ইউটিউব কনটেন্ট নির্মাতা নন; তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। তার ব্যবসায়িক সাফল্যের অন্যতম প্রধান উদাহরণ হলো “মিঃ বিস্ট বার্গার”। এটি একটি ভার্চুয়াল রেস্তোরাঁ চেইন, যা অনলাইনে অর্ডার নেওয়ার মাধ্যমে কাজ করে। ২০২০ সালে চালু হওয়া এই উদ্যোগ কয়েক মাসের মধ্যেই একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে। এছাড়া তিনি “ফিস্টেবলস” নামে একটি চকলেট ব্র্যান্ড চালু করেছেন, যা স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য পরিচিত।

মিঃ বিস্ট প্রমাণ করেছেন যে ক্রিয়েটিভিটি এবং উদারতার মাধ্যমে শুধু ইউটিউবিং নয়, বরং মানুষের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। তিনি আমাদের শেখাচ্ছেন প্রযুক্তি এবং সোসাল মিডিয়া কেবল ব্যক্তিগত লাভের জন্য নয়, বরং বিশ্বকে আরও উন্নত করার জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।

কমেন্ট করুন