চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা ক্রমাগত বাড়ছে, তাই অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে পারফেক্ট সিভি তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সিভি আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। ছোট ছোট কিছু বিষয় খেয়াল করলেই আপনার সিভি হবে অন্যদের থেকে আরো আকর্ষণীয় এবং পারফেক্ট। পারফেক্ট সিভি তৈরি করার জন্য ডিজাইন, উপস্থাপনা, এবং প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই আর্টিকেলে একটি পারফেক্ট সিভি তৈরির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সিভি কী?
সিভি হলো আপনার শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, এবং অর্জনের সারাংশ। চাকরিদাতা সাধারণত সিভি দেখে প্রার্থীর প্রাথমিক মূল্যায়ন করে থাকেন। তাই, সিভি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে তা প্রথম দেখাতেই চাকরিদাতা প্রার্থী সম্পর্কে সম্যক ধারণা পান।
সিভি লেখার নিয়ম
- সঠিক ফরম্যাট নির্বাচনঃ সিভির ফরম্যাট নির্বাচন করার সময় চাকরির ধরণ এবং চাকরিদাতার চাহিদার কথা মাথায় রাখতে হবে। সাধারণত তিন ধরনের ফরম্যাট প্রচলিত আছে।
- ক্রমিক ফরম্যাটঃ এই ফরম্যাটে আপনার অভিজ্ঞতাগুলো সময়ের ক্রম অনুযায়ী সাজানো হয়।
- ফাংশনাল ফরম্যাটঃ এই ফরম্যাটে দক্ষতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
- কম্বিনেশন ফরম্যাটঃ এটি দুই ধরনের ফরম্যাটের সংমিশ্রণ।
- তথ্য ক্রমঃ সিভির শুরুতেই আপনার নাম, যোগাযোগের ঠিকানা, ই-মেইল, এবং ফোন নম্বর যুক্ত করুন। এরপর ফরম্যাট অনুযায়ী অন্যান্য তথ্য দিন। এতে চাকরিদাতার আপনার সিভি বুঝতে ও পড়তে সুবিধা হবে। যা আপনাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
- পেশাগত সারাংশঃ পেশাগত সারাংশ হলো আপনার সিভির একদম প্রথম অংশ, যেখানে ২-৩ লাইনে আপনার ক্যারিয়ার এবং দক্ষতা সম্পর্কে সর্ট ডেসক্রিপশন দিতে হয়। এটি এমন হতে হবে যা চাকরিদাতার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতাগুলো ক্রম অনুযায়ী উল্লেখ করুন। শিক্ষার সাথে অর্জিত বিশেষ সম্মাননা বা পুরস্কার থাকলে তা যোগ করতে ভুলবেন না।
- কর্ম অভিজ্ঞতাঃ কর্ম অভিজ্ঞতা বর্ণনা করার সময় কাজের শিরোনাম, প্রতিষ্ঠানের নাম, এবং কাজের সময়কাল উল্লেখ করুন। কাজের বর্ণনা এবং প্রাপ্ত সাফল্যগুলো তুলে ধরুন।
- অতিরিক্ত তথ্যঃ যদি আপনার অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ, ভাষাগত দক্ষতা, বা কোনো স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে তা উল্লেখ করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ
গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস
- প্রাসঙ্গিকতাঃ চাকরির বিজ্ঞাপনে যা যা চাওয়া হয়েছে তা সিভিতে অন্তর্ভুক্ত করুন। অপ্রাসঙ্গিক তথ্য যোগ করলে চাকরিদাতা বিরক্ত হতে পারেন।
- অ্যাকশন ওয়ার্ডঃ আপনার কাজের দায়িত্ব বর্ণনা করার সময় অ্যাকশন ওয়ার্ড ব্যবহার করুন, যেমন: “পরিকল্পনা করা,” “বাস্তবায়ন করা,” বা “নেতৃত্ব দেওয়া।”
- ডিজিটাল সিভিঃ অনলাইনে আবেদন করলে ডিজিটাল ফরম্যাটে সিভি পাঠানোর জন্য সঠিক ফাইল ফরম্যাট (PDF) ব্যবহার করুন। অনেকে এখন সৃজনশীল ডিজাইনের জন্য Canva বা অন্যান্য ডিজাইন টুল ব্যবহার করেন।
সাধারণ কিছু ভুল
- ব্যাকরণগতঃ বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। ভুল বানান বা ব্যকরণ আপনার সিভির গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দিতে পারে।
- মিথ্যা তথ্যঃ মিথ্যা তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার সিভির মান কমবে না বরং বাড়বে। এছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে চাকরি পেলেও তা স্থায়ী হবে না।
- অপ্রাসঙ্গিকঃ অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনীয় তথ্যই যথেষ্ট। অযথা আলোচনা করে সিভি বড় বানানো গেলেও চাকরির নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না।
- দীর্ঘ সিভিঃ আমি আগেই বলেছি সিভি প্রার্থী সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনার জন্য নেওয়া হয়। তাই সিভিতে আল্পের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করুন।
সিভি চাকরির ক্ষেত্রে আপনার প্রাথমিক পরিচয় যা আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতাকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করে, তাই সিভি তৈরীর ব্যপারে যত্নবান হন।
কমেন্ট
কাওসার মাতুব্বর
ক্যারিয়ার নিয়ে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ
কমেন্ট করুন