লিনাক্স একটি ওপেন সোর্স এবং ফ্রি অপারেটিং সিস্টেম যা ইউনিক্স-লাইক কার্নেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত। বিশেষ করে সার্ভার, ডেস্কটপ, এবং এমবেডেড সিস্টেমে। লিনাক্সের কিছু গুরুত্বপূর্ণ খুটিনাটি নিচে দেওয়া হলো:
১. কার্নেল (Kernel)
- লিনাক্স কার্নেল হল অপারেটিং সিস্টেমের মূল অংশ যা হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে যোগাযোগ পরিচালনা করে।
- এটি মেমরি ম্যানেজমেন্ট, প্রসেস ম্যানেজমেন্ট, ডিভাইস ড্রাইভার, এবং সিস্টেম কল পরিচালনা করে।
২. ডিস্ট্রিবিউশন (Distributions)
- লিনাক্সের বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশন রয়েছে, যেমন উবুন্টু, ফেডোরা, ডেবিয়ান, সেন্টোস, আর্চ লিনাক্স ইত্যাদি।
- প্রতিটি ডিস্ট্রিবিউশন আলাদা প্যাকেজ ম্যানেজমেন্ট, ডিফল্ট সফটওয়্যার, এবং ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে।
৩. প্যাকেজ ম্যানেজমেন্ট
- লিনাক্স ডিস্ট্রিবিউশনগুলি সাধারণত প্যাকেজ ম্যানেজার ব্যবহার করে সফটওয়্যার ইনস্টল, আপডেট, এবং রিমুভ করতে।
- উদাহরণ:
APT(উবুন্টু, ডেবিয়ান),YUM/DNF(ফেডোরা, সেন্টোস),Pacman(আর্চ লিনাক্স)।
৪. ফাইল সিস্টেম
- লিনাক্সে বিভিন্ন ফাইল সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যেমন ext4, XFS, Btrfs ইত্যাদি।
- ফাইল সিস্টেম ফাইল এবং ডিরেক্টরি সংগঠিত করে এবং ডেটা স্টোরেজ ম্যানেজ করে।
৫. কমান্ড লাইন ইন্টারফেস (CLI)
- লিনাক্সে কমান্ড লাইন ইন্টারফেস (টার্মিনাল) ব্যবহার করে সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং টাস্ক অটোমেশন করা যায়।
- সাধারণ কমান্ড:
ls,cd,cp,mv,rm,grep,find,chmod, ইত্যাদি।
৬. গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI)
- লিনাক্সে বিভিন্ন ডেস্কটপ এনভায়রনমেন্ট রয়েছে, যেমন GNOME, KDE Plasma, XFCE, LXDE ইত্যাদি।
- এই GUI ইউজারদের জন্য ভিজুয়াল ইন্টারফেস প্রদান করে।
৭. ইউজার এবং পারমিশন
- লিনাক্সে ইউজার এবং গ্রুপের ভিত্তিতে ফাইল এবং ডিরেক্টরির পারমিশন সেট করা যায়।
- পারমিশন তিন ধরনের: রিড (
r), রাইট (w), এবং এক্সিকিউট (x)।
৮. নেটওয়ার্কিং
- লিনাক্সে নেটওয়ার্ক কনফিগারেশন এবং ম্যানেজমেন্টের জন্য বিভিন্ন টুল রয়েছে, যেমন
ifconfig,ip,netstat,ssh,scpইত্যাদি। - ফায়ারওয়াল কনফিগারেশনের জন্য
iptablesবাufwব্যবহার করা হয়।
৯. শেল স্ক্রিপ্টিং
- লিনাক্সে শেল স্ক্রিপ্টিং ব্যবহার করে অটোমেটেড টাস্ক এবং সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন করা যায়।
- সাধারণ শেল:
Bash,Zsh,Fishইত্যাদি।
১০. লগ ফাইল
- লিনাক্সে সিস্টেম লগ ফাইলগুলি সাধারণত
/var/logডিরেক্টরিতে সংরক্ষিত হয়। - উদাহরণ:
syslog,auth.log,kernel.log।
১১. সিকিউরিটি
- লিনাক্সে সিকিউরিটি ফিচার যেমন SELinux, AppArmor, এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে সিস্টেম সুরক্ষিত করা যায়।
- রুট ইউজার (সুপারইউজার) সর্বোচ্চ অনুমতি প্রদান করে।
১২. ভার্চুয়ালাইজেশন এবং কন্টেইনারাইজেশন
- লিনাক্সে ভার্চুয়ালাইজেশনের জন্য KVM, Xen, এবং কন্টেইনারাইজেশনের জন্য Docker, Podman ব্যবহার করা হয়।
১৩. কমিউনিটি এবং ডকুমেন্টেশন
- লিনাক্সের একটি বিশাল কমিউনিটি রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে।
- অনলাইন ফোরাম, উইকি, এবং ডকুমেন্টেশন (man pages) ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করা যায়।
১৪. কাস্টমাইজেশন
- লিনাক্স অত্যন্ত কাস্টমাইজযোগ্য। ব্যবহারকারীরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সিস্টেম কনফিগার করতে পারে।
ফ্রি এবং ওপেন সোর্স
- লিনাক্স ফ্রি এবং ওপেন সোর্স সফটওয়্যার (FOSS) যা ব্যবহার, পরিবর্তন, এবং বিতরণের স্বাধীনতা প্রদান করে।
লিনাক্সের এই বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে একটি শক্তিশালী এবং নমনীয় অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। লিনাক্সের খুটিনাটি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টে করেছি। চাইলে আমাদের প্রযুক্তি ক্যাটেগরি থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

কমেন্ট করুন