প্রত্যেকেই ক্যারিয়ার নিয়ে কম বেশি লড়াই করেন। বিশেষ করে পড়াশোনার শেষের দিকে লড়াইটা একটু বেশিই করতে হয়। এসময় আপনার মনে হতে পারে আপনার বন্ধুরা আপনার থেকে এগিয়ে যাচ্ছে আর আপনি এখনো কিছুই করতে পারেননি। আপনার লক্ষে পৌছাতে পারলে যেমন আর্থিক সুবিধা ভোগ করতে পারবেন তেমন ভালো লাইফস্টাইলও অর্জন করতে পারবেন। কিন্তু সেজন্যে অবশ্যই অনেক কর্মঠ হতে হবে। তবে আজকে আমরা এমন ৭ উপয় নিয়ে কথা বলব যা আপনাকে একটি উন্নত ক্যারিয়ার উপহার দিতে পারে।
১. নিজের ইচ্ছাকে প্রধান্য দিন
ক্যারিয়ারের সিদ্ধান্তে আপনার ব্যক্তিগত আগ্রহ ও প্যাশান গুরুত্বপূর্ণ। যা আপনাকে আনন্দ দেয়, তা খুঁজে বের করুন। সমাজ বা পরিবারের চাপে নয় বরং নিজেই নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। উদাহরণ হিসেবে যদি আপনি ক্রিয়েটিভ কাজ পছন্দ করেন তাহলে মার্কেটিং বা ডিজাইনের দিকে মনোযোগ দিন। যদি গাণিতিক বিষয় গুলো ভালো লাগে তাহলে প্রোগ্রামিং করতে পারেন। আপনার ভালো লাগা বা না লাগা, পছন্দ হওয়া বা না হওয়ার উপর আপনার ক্যারিয়ার গড়ে উঠবে তাই অভিজ্ঞদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
২. ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করুন
যদিও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী নাও হতে পারে। তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিকল্পনা করার মাধ্যমে নিজের কাজ গুলো গুছিয়ে নেওয়া যায়। তাই উন্নত ক্যারিয়ারের জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধাপে ধাপে প্লানিং করুন। নির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য ও প্রাসঙ্গিক লক্ষ নির্ধারণ করুন। যেমন পরিকল্পনা গুলো এমন হতে পারে যে, আগামী ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে আমাকে ফুল স্টক ডেভলপার হতেই হবে।
৩. নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন
গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ৮৫% চাকরি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া যায়। তো বুঝতেই পারছেন ক্যারিয়ারে নেটওয়ার্কিং কতটা গুরুত্ব বহন করে। একজন অভিজ্ঞ মেন্টর খুঁজুন, যিনি আপনার ফিল্ডে সফল। প্রয়োজনে তার আন্ডারে খুবই কম স্যালারিতে জব করুন। এতে আপনার নেটওয়ার্ক বাড়বে। ভালো ভালো জব অপুর্চুনিটি আসবে।
৪. দক্ষতা অর্জন করুন
নিজেকে দক্ষ করার মাধ্যমে ক্যারিয়ার এগিয়ে নিতে পারবেন। কোন কাজ করার পাশাপাশি সেই কাজে নিজেকে এমন করে তুলুন যাতে আপনাকে রিপ্লেস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। আপনি যত দক্ষ হবেন উন্নত ক্যারিয়ারের পথে ততই এগিয়ে যাবেন। আশাকরি উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার জন্য দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছেন।
৫. চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন
টমাস এডিসনের মতো ভাবুন—”আমি ব্যর্থ হইনি, শুধু ১০০০টি ভুল পথ শিখেছি।” পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করুন, পুরো বিষয়টি কয়েকটি ছোট ছোট ধাপে ভাগ করুন, পরিবেশের সাথে মিলে সমাধান করার চেষ্টা করুন। ইনশাআল্লাহ সমাধানতো আসবেই।
৬. আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন
উন্নত ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে নিজের উপর বিশ্বাস খুবই জরুরী একটি বিষয়। আত্মবিশ্বাসী কর্মীরা ৩৮% বেশি স্যালারি নেগোশিয়েট করতে সক্ষম। দ্বিধা কমিয়ে নিজের কাজের দক্ষতা এবং ক্ষমতা নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার সময় এখনই। তবে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আবার ধ্বংসের কারন হয়ে দাড়াতে পারে। তাই যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।
৭. ইতিবাচক মনোভাব রাখুন
ইতিবাচক মানুষের সঙ্গে সবাই কাজ করতে পছন্দ করে। গ্রুপের সবার কাছে পছন্দের মানুষ হয়ে উঠতে পারলে খুব দ্রুতই পদোন্নতি পাওয়া যায়। ইতিবাচক মনোভাবের কারনে অনেক কঠিন ও সময় সাপেক্ষ কাজও সহজেই সম্পন্ন করা সম্ভব।
এই কৌশলগুলো প্রয়োগ করে আপনি শুধু চাকরি পাবেন না, বরং একটি অর্থপূর্ণ পেশাগত জীবন গড়ে তুলবেন। ক্যারিয়ার উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যার জন্য সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষতা ও মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। ক্যারিয়ার বিষয়ক অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে ক্লিক করুন।
কমেন্ট করুন