স্টুডেন্ট জীবন সাধারণত শেখার সময়, তবে এই সময়ে আয় করারও প্রচুর সুযোগ রয়েছে। বর্তমান প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেটের কারণে যেকেউ ঘরে বসে সহজেই আয় করতে পারে। এতে পড়ালেখা শেষে চাকরি পেতে বা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব স্টুডেন্ট অবস্থায় আয় করার ১০ উপায়।
আমরা সহজ ধাপ গুলোকে উপরের দিকে রেখেছি। এবং তুলনামূলক কঠিন ধাপ গুলো নিচের দিকে।
১. কনটেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং
যারা লেখালেখি পছন্দ করেন, তারা কনটেন্ট রাইটিং বা ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন ওয়েবসাইটে লেখালেখি করার সুযোগ আছে। চাইলে এন্টর্কেও লেখতে পারেন। এন্টর্কে লেখার জন্য কন্টাক্ট পেজে দেওয়া মেইলে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও ক্লায়েন্টের জন্য কনটেন্ট লিখেও ইনকাম করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ইংরেজি কন্টেন্টের চাহিদা বেশি। সুতারাং ইংরেজিতে দক্ষ হলে ক্লায়েন্টের জন্য কনটেন্ট লিখে ইনকাম করা সম্ভব। লেখালেখি করে ইনকামের অন্যতম একটি উপায় হলো নিজের ব্লগে অ্যাড রান করা। এজন্য কিছু খরচ করতে হবে। অর্থাৎ ডোমেইন ও হোস্টিং কিনতে হবে। ওয়েবসাইট ডেভলপ করতে হবে। ডোমেইন ও হোস্টিং কেনা বা ওয়েবসাইট ডেভলপ করার ক্ষেত্রে গ্যালিওন এর পরামর্শ নিতে পারেন।
২. ইউটিউবিং বা ভিডিও তৈরী
ইউটিউব হলো এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনার পছন্দের বিষয় নিয়ে ভিডিও তৈরি করে আয় করতে পারেন। পড়াশোনা, ভ্রমণ, রান্না, বা গেমিং—যেকোনো বিষয়েই ভিডিও বানিয়ে টাকা উপার্জন সম্ভব। বর্তমানে ইউটিউব থেকে আয় করা কিছুটা কঠিন। বেশ কিছু নিয়ম আছে। তবে ইউটিউবিং করে অনেকেই সফল ক্যারিয়ার গড়েছেন। ইউটিউবে এডসেন্স, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সহ আরো অনেক ভাবে ইনকাম করা যায়।
৩. ফটোগ্রাফি ও ছবি বিক্রি
যদি ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসেন, তাহলে আপনার তোলা ছবি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে পারেন। প্রফেশন সহজ হলেও ইনকাম করা কঠিন। সেল কম ইনকামও কম। তাই ফটোগ্রাফি করে ইনকাম করা যত সহজ মনে হয় ততটা সহজ নয়। এটা অনেকটা প্যাসিভ ইনকামের মত। প্যাসিভ ইনকাম আইডিয়া জানতে ক্লিক করুন।
৪. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে আপনি কোনো পণ্যের লিংক শেয়ার করেন, এবং সেই লিংকের মাধ্যমে কেউ কিনলে আপনি কমিশন পান। তবে এর জন্য ফ্যান বেস বা হার্ড ওয়ার্ক দরকার। ফ্যান বেস থাকলে ইজিলি ইনকাম করতে পারবেন। আর হাডওয়ার্ক করে পণ্য বা সেবার লিং সব জাগায় শেয়ার করতে হবে। কেউ গালি দিবে আবার কেউ মন্দ বলবে। হাজারো সমস্যার মধ্যে টিকে থাকতে হবে।
৫. অনলাইন টিউটরিং
যেকোনো বিষয় নিয়ে পড়ানোর দক্ষতা থাকলে আপনি অনলাইন টিউটরিং করতে পারেন। অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেমন Chegg, TutorMe, যেখানে পড়ানোর সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়া কোর্স বিক্রি করেও ইনকাম করতে পারেন। তবে এই সেক্টরে বর্তমানে প্রচুর কম্পিটিশন।
৬. ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে বিভিন্ন ব্যবসার ডাটা এন্ট্রি, ইমেইল ম্যানেজমেন্ট, বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ করতে পারেন। বর্তমানে অনেক নতুন নতুন কোম্পানি তৈরী হচ্ছে তাদের কাস্টমার সাপোর্ট দিয়েও ইনকাম করা যায়। আবার ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবা পার্টাইম বা ফুলটাইম জবও করতে পারেন।
৭. গ্রাফিক ডিজাইন
গ্রাফিক ডিজাইনারদের জন্য Fiverr, Upwork, এবং Freelancer-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রচুর কাজের সুযোগ আছে। তবে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে তৈরী করতে হলে মিনিমাম ১ বছর সময় দিতে হবে। স্কিল ডেভলপ করতে হবে। কারণ গ্রাফিক ডিজাইন সেক্টরটি ক্রিয়েটিভ সেক্টর। এখানে দৈহিক পরিশ্রমের থেকে মানুষিক পরিশ্রম বেশি। তবে শুরু করার জন্য খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। ভালো ইনকামের জন্য অনেক সময় দিতে হবে।
৮. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ফ্রিল্যান্সিংয়ের অন্যতম জনপ্রিয় সেক্টর। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে শুরু করলে অনলাইনে আয়ের অসংখ্য সুযোগ পাবেন। ধৈর্য ও পরিশ্রম আপনাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে। মিনিমাম ২ বছর সময় হাতে নিয়ে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে আসতে হবে। হুট করে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করা সেক্টর এটা না। এখানে কোন শর্টকার্ট নেই।
স্টুডেন্ট অবস্থায় আয় করার উপায়গুলো শিখে নেওয়া কেবল আর্থিক সুবিধাই দেয় না, বরং দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগও তৈরি করে। আপনার আগ্রহ ও দক্ষতার উপর ভিত্তি করে এক বা একাধিক উপায় বেছে নিয়ে শুরু করুন। সঠিক প্রচেষ্টা ও ধৈর্যের মাধ্যমে আপনি সফল হবেন।
কমেন্ট
কাওসার মাতুব্বর
সুন্দর লিখছ। আর বিষটিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ
কমেন্ট করুন