শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কেন ব্যবহার করবেন?

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কেন ব্যবহার করবেন?

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বলতে আমরা সাধারণত এমন পাসয়ার্ড বুঝি যেটা সহজেই হ্যাকার ক্র্যাক করতে পারে না। ছোট ও বড়ো হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং স্পেশাল ক্যারেক্টর, যেমনঃ @-$& ইত্যাদি সব মিলিয়ে বানাতে হবে। নিজের জন্মতারিখ,কনটাক্ট নম্বর,আপনার ঠিকানা,নিজের নাম অথবা প্রিয় মানুষের নাম একদমই ব্যবহার করবেন না।

এবার আসি, কেন আপনি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন ?

আপনি হয়তো আপনার ফোনস্ক্রিনে একটি প্যাটার্ন  অথবা পাসওয়ার্ড লক ব্যবহার করছেন। আরো সহজে বুঝতে হলে, আমি ধরে নিচ্ছি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোনে একটি ফেসবুক একাউন্ট রয়েছে। কিন্তু আপনি হয়তো চান না যে, যেকেউ আপনার অজান্তে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুক অথবা আপনার ফোনস্ক্রিন লক বাইপাস করে ফোনে থাকা বিভিন্ন তথ্য দেখুক।

এরকম বিভিন্ন  প্রয়োজনে আমরা অনলাইনে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট খুলে থাকি। যা হতে পারে কোন ব্যাংক একাউন্ট বা বিজনেস পেইজের অ্যাকাউন্ট বা ওয়েবসাইট। যা পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। সুতরাং এসব একাউন্টে অন্য কারো অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশ এড়াতে এবং হ্যাকিংয়ের শিকার হতে বাঁচতে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, কেন আমাদের প্রতিটি অ্যাকাউন্টে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। 

কিভাবে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন ? 

বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনঃ পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ১১ থেকে ১২ ক্যারেক্টার যথেষ্ট। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান স্যানস অবশ্য পাসওয়ার্ডে ১৫ ক্যারেক্টার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে।

পাসওয়ার্ডে আপার ও লোয়ারকেস লেটার ব্যবহার করঃ সর্বদা পাসওয়ার্ডে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষর এবং ছোট হাতের অক্ষর মিলিয়ে ব্যবহার করুন। যেমন-aBjsEuG

পাসওয়ার্ডে নম্বর ও সিম্বল ব্যবহার করুনঃ যেকোনো পাসওয়ার্ডকে শক্তিশালী করতে চাইলে বিভিন্ন কিছু ব্যবহার করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ক্যাপিটাল বা আপারকেস লেটার, লোয়ার কেস লেটার, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্ন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে-AbjsE7uG61!@

প্রতিটি সাইটের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুনঃ  অনেকেই মনে রাখার সুবিধার জন্য বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে একটি অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জানতে পারলে ওই ব্যক্তির সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডই জানা হয়ে যায়, যা নিরাপত্তার জন্য হুমকির বিষয়। তাই নিজে মনে রাখতে পারেন এমন ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য।

পাসওয়ার্ড তৈরীর সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বর্জন করুনঃ

১। পাসওয়ার্ডে কখনোই নিজের একান্ত বাক্তিগত তথ্য ব্যবহার করবেন না। যেমন- নিজের নাম অথবা পছন্দের মানুষের নাম, মোবাইল নম্বর, জন্মতারিখ, ঠিকানা।

২। কখনোই ছোট পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। কমপক্ষে ৮ সংখ্যার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। 

৩। শুধু নাম্বার ব্যবহার থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ডের উদাহরণঃ

ধরুন আমার নাম জামাল চৌধুরী, জন্ম-1985, ফোননম্বর- 935628668, ঠিকানাঃ গোপালগঞ্জ। তবে পাসওয়ার্ডের মধ্যে আমি এগুলো কোনোটাই ব্যবহার করব না। কারন একজন হ্যাকার আমার একাউন্ট হ্যাক করার পূর্বে আমার সোশ্যল মিডিয়া ঘেটে আমার একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য খুঁজে বের করবে। এবং পাসওয়ার্ড হিসেবে সর্বপ্রথম ওগুলো ব্যবহার করবে।

সুতরাং পাসওয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে আমি এমন কিছু ব্যবহার করব যার কোনো অর্থ থাকবে না। এবং এটা একজন হ্যাকার ধারণা করতে পারবে না। পাসওয়ার্ডটি হতে পারে ?yR&6s!PfD*&.% এরকম কিছু। যার কোন অর্থই নেই। এখানে আমি ইংরেজি বড় ছোট অক্ষর, সিম্বল, নাম্বার সব মিলিয়ে ব্যবহার করেছি। আর সম্ভব হলে প্রতি এক মাস বা ২/৩ মাসের ব্যবধানে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। আমার মতে পাসওয়ার্ড মনে রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বাসার পার্সোনাল ডায়েরিতে নোট করা।

পাসওয়ার্ড ব্যবহারে সতর্কতাঃ

কখনো কোনো লিংকে ক্লিক করলে যদি পাসওয়ার্ড ফরম আসে তাহলে অবশ্যই লিংক টি ভালোভাবে চেক করুন। যেমন faecbook.com এবং facebook.com লিংক দুটো দেখতে একই রকম হলেও মুলত একই না। সুতরাং ভালোভাবে লিংক চেক করে পাসওয়ার্ড দিন।

সর্বপরি, একজন হ্যাকার আপনার আমার থেকেও অনেক বেশি বুদ্ধিমান। তাই পযুক্তি ব্যবহারে সতর্কতা ও সচেতনতাই আপনাকে সাইবার আক্রমণের শিকার হতে রক্ষা করতে পারে। তাই সতর্ক হোন নিরাপদ থাকুন। 

সময় নিয়ে আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর আপনার মূল্যবান মতামতটি কমেন্ট করতে পারেন। আপনার কিছু জিজ্ঞাসা থাকলে তাও কমেন্টে জানাতে পারেন। আপনাদের মতামত আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমাদের সাইবার সুরক্ষা ক্যাটেগরি ঘুরে দেখতে পারেন ধন্যবাদ

কমেন্ট

কাওসার মাতুব্বর
কাওসার মাতুব্বর

সাইবার ক্রাইম বর্তমানে মারাত্মক এক ব্যাদি। ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে উপাস্থপনের জন্য।

কমেন্ট করুন