বাংলাদেশে PayPal চালু হলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?

বাংলাদেশে PayPal চালু হলে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?

ডিজিটাল লেনদেন ও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের উন্নয়নের বিপরীতে PayPal এর চাহিদা বাড়ছে। PayPal বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমগুলোর মধ্যে একটি। এটি নিরাপদ ও দ্রুত লেনদেনের জন্য বেশি পরিচিত। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও PayPal এর সরাসরি সেবা চালু নেই। এই আর্টিকেলে আমরা PayPal এর সুবিধা, গুরুত্ব এবং এর সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

১. ফ্রিল্যান্সারদের

বাংলাদেশে লক্ষাধিক ফ্রিল্যান্সার Upwork, Fiverr, Freelancer.com ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম থেকে নিয়মিত আয় করছেন। বর্তমানে তারা Payoneer, Wise, ব্যাংক ট্রান্সফার ইত্যাদির মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকেন, যা সময়সাপেক্ষ ও ব্যায়বহুল। PayPal চালু হলে ক্লায়েন্টরা এক ক্লিকেই টাকা পাঠাতে পারবেন এবং ফ্রিল্যান্সাররা তা নিজের ব্যাংকের মাধ্যমে সহজেই তুলতে পারবেন।

PayPal-এ প্রতি লেনদেনে ২.৯% + $০.৩০ ফি লাগে, যা অনেক ক্ষেত্রে Payoneer বা অন্যান্য সেবার চেয়ে সাশ্রয়ী। বৃহৎ অঙ্কের পেমেন্টে ফি আরও কম হতে পারে। PayPal থেকে স্থানীয় ব্যাংকে টাকা ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাঠানো যায়।

২. ই-কমার্স ও অনলাইন বিজনেসের

বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা Amazon, eBay, Shopify, Etsy-এর মতো প্ল্যাটফর্মে পণ্য বিক্রি করতে চাইলে PayPal একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ৯০-৯৫% ইন্টারন্যাশনাল ক্রেতা PayPal-এ আস্থা রাখে। PayPal না থাকায় অনেক বাংলাদেশি বিক্রেতা আন্তর্জাতিক অর্ডার মিস করেন।

PayPal বায়ার ও সেলারদের সুরক্ষা দিয়ে থাকে, ফলে স্ক্যামের ঝুঁকি কম। চার্জব্যাক এর ঝামেলা কমাতে সাহায্য করে। PayPal চালু হলে Shopify, WooCommerce দ্বারা পরিচলিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম গুলো সহজেই পেমেন্ট অপশন ইন্টিগ্রেশন করতে পারবে।

৩. সাধারণ ব্যবহারকারীদের

বিদেশে পড়াশোনা বা শপিং এর ক্ষেত্রে PayPal গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মাধ্যমে Amazon, Netflix, Spotify এর মত প্লাটফর্ম গুলোতে পেমেন্ট দেওয়া যাবে। পরিবারের কাছে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীরা PayPal ব্যবহার করতে পারবেন। ডিজিটাল ওয়ালেট হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে PayPal ব্যালেন্স রাখা যাবে এবং যেকোনো সময় টাকা পাঠানো যাবে।

সম্ভাবনা

  • বাংলাদেশের ডিজিটাল ইকোনমির দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে PayPal এর মতো সার্ভিসের চাহিদা বেশি।
  • সরকার ফ্রিল্যান্সার ও রেমিট্যান্স সেক্টরকে সহায়তা করতে চাইলে PayPal চালু করা সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে।

চ্যালেঞ্জ

  • বাংলাদেশ ব্যাংক PayPal-কে অনুমতি দিলে রিজার্ভ নিয়ে সমস্যা হতে পারে।
  • PayPal-এর কারেন্সি কনভার্শন ফি বেশি হতে পারে।
  • স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সাথে সমন্বয় করা কষ্টসাধ্য। PayPal-কে বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর সাথে API ইন্টিগ্রেশন করতে হবে।

বাংলাদেশে PayPal চালু হলে ফ্রিল্যান্সার, ই-কমার্স বিক্রেতা, সাধারণ ব্যবহারকারী সবার জন্যই যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। তবে, এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক ও PayPal কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ PayPal-এর পূর্ণ সুবিধা পাবে এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। পেপাল চালুর দাবি। চাইলে আমাদের ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটেগরি ভিজিট করতে পারেন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। কথা হবে আবারো অন্য কোন আর্টিকেলে।

কমেন্ট করুন